দৈনিক প্রত্যয় ডেস্ক:দেশে বেড়েই চলছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। প্রতিদিনই বাড়ছে কভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা। এমতাবস্থায় আতঙ্ক ভর করেছে সিলেটেও। মহামারী দেখা দিলে সিলেটে কীভাবে আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়া হবে এ নিয়ে চলছে নানা পরিকল্পনা। করোনা প্রতিরোধের পাশাপাশি চিকিৎসা সক্ষমতা নিয়েও প্রশাসনের উদ্যোগে দফায় দফায় হচ্ছে সমন্বয় সভা। নেওয়া হচ্ছে নানা প্রস্তুতি। আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে করোনা চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ আইসিইউ ইউনিট স্থাপন ও বেসরকারি হাসপাতাল অধিগ্রহণের উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে দুটি আইসিইউ বেড এনে স্থাপন করা হয় শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে। কিন্তু দেশে দিন দিন রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় সিলেটেও চিকিৎসার সক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর অংশ হিসেবে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের উদ্যোগে পাঠানো আরও ৯টি আইসিইউ বেড (ভেন্টিলেশন, কার্ডিয়াক মনিটরসহ) স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। এই ১১টি বেড দিয়ে হাসপতালটিতে পূর্ণাঙ্গ আইসিইউ ইউনিট চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন ওসমানী হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইউনুছুর রহমান। এদিকে সিলেটে কভিড-১৯ আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের কাছে সহযোগিতা চেয়ে চাহিদাপত্র পাঠিয়েছেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইউনুছুর রহমান। তার চাহিদাপত্রের মধ্যে রয়েছে একটি আইসিইউ অ্যাম্বুলেন্স, ২০টি করে আইসিইউ বেড, ভেন্টিলেটর, কার্ডিয়াক মনিটর, শামসুদ্দিন হাসপাতালে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সাপ্লাই, জেনারেটর ও ২০টি অক্সিমিটার। জানা গেছে, এসব যন্ত্রপাতি শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়লে তাদের চিকিৎসার জন্য একটি বড় বেসরকারি হাসপাতাল অধিগ্রহণের পরিকল্পনা চলছে বলে জানিয়েছেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তিনি জানান, শুধু শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতাল দিয়ে চিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তাই কভিড-১৯ আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য একটি বেসরকারি হাসপাতাল অধিগ্রহণের চিন্তাভাবনা চলছে। অধিগ্রহণকৃত হাসপাতালটিতে অন্যান্য বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক থেকে আইসিইউ বেড এনে করোনা রোগীদের চিকিৎসায় ব্যবহারেরও পরিকল্পনা রয়েছে। আজ শনিবার করোনাভাইরাস মোকাবিলায় গঠিত বিভাগীয় পর্যায়ের কমিটির সভায় তিনি এ প্রস্তাব উত্থাপন করবেন বলেও জানান মেয়র। এদিকে সিলেটে করোনা আক্রান্ত এক চিকিৎসককে গত বুধবার ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। গত ৫ এপ্রিল পরীক্ষায় তার করোনা পজেটিভ ধরা পড়ার পর থেকে তিনি নিজ বাসায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। মঙ্গলবার রাতে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি করা হয়। বুধবার তাকে ঢাকায় প্রেরণের পর সিলেটে করোনা চিকিৎসার সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তবে বুধবার রাতে প্রেস ব্রিফিং করে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইউনুছুর রহমান জানান, সব ধরনের সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও ওই চিকিৎসক তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে ঢাকায় গেছেন। তাকে হাসপাতালের পক্ষ থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়নি। শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালের আইসিইউ অকার্যকর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঝড় ওঠা এমন সমালোচনার জবাবে তিনি জানান, ‘হাসপাতালের দুটি আইসিইউ সচল রয়েছে। আক্রান্ত ওই চিকিৎসক তাকে ওসমানী হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটে স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু সাধারণ রোগীদের জন্য করোনা রোগীদের ওসমানীতে চিকিৎসা দেওয়ার সুযোগ নেই।